ফোন রিভিউ Walton R3 ও Nokia xl এবং symphony w160
ওয়ালটন R3 –vs –নোকিয়া X2–vs–সিম্পনী 160বেশ কিছুদিন ধরে আমি ফেজবুকের ভিবিন্ন গ্রুপে এবং পেজে দেখলাম যে walton ,symphony,এবং nokia গ্রাহকা একটা বিষয় নিয়ে অনেক হতাশায় ভুগতেছেন। ব্র্যান্ড গুলোর সম্প্রতি বাজারে ছাড়া প্রায় একই দাম এবং ফিচার যুক্ত তিনটি মোবাইল নিয়েই হতাশার মুল কারন গ্রাহকদের মাঝে।প্রায় কাছাকাছি দাম এবং ফিচার যুক্ত হওয়ায় তারা অনেকে হয়তো এখন ও কিনতে পারেনি নিজের চাহিদার মোবাইলটি। আজকে আমি তাদের জন্যই হাজির হলাম রিভিউটি নিয়ে। আশাকরি রিভিউটি ভালোমত বুজতে পারলে নিদিষ্ট মোবাইল কিনতে আর কোন সমস্যা হবে না গ্রাহকদের।এখানে আমি শুধুমাএ মুল বিষয় গুলো আলোছনা করবো।
প্রথমেই আসা যাক বিল্ড কোয়ালিটি এবং লুকিং/ডিজাইন নিয়ে¶¶¶
আপনারা অনেকে হয়তো অনেকে এতদিনে জেনে ফেলেছেন কোনটার বিল্ডকোয়ালিটি সবচেয়ে ভালো হবে!আমার দেখা মতে নোকিয়া XL এর বিল্ড কোয়ালিটি সবচেয়ে ভালো।সম্পূর্ণ ম্যাট ফিনিশিং দেওয়া হয়েছে ফোনটিতে। Nokia লুমিয়া সিরিজের মত প্লাস্টিকের তৈরি যা সত্যিই কমদামী ফোনগুলোতে পাওয়া অসাধারন ব্যাপার। একবার হাতে নিলেই আপনার পচন্দ হয়ে যাবে। এছাড়া ক্র্যচ পড়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম। এছাড়া নোকিয়া যদিও এটাকে ওয়ার ফ্লুপ দাবি করেনি, তবে নোকিয়া বাংলাদেশের একটা youtube রিভিউতে দেখা গেছে যে XL এ পানি এবং কোকোকলা ঢালার পরও কোন ক্ষতি হয়নি। আর অন্যদিকে primo r3 এর বডি Nokia XL এর মত কিছুটা ম্যাট ফিনিশিং করা হলেও নিম্নমানের প্লাস্টিক ব্যাহার করা হয়েছে যা এক দুবছর ব্যাবহারের ফলে ক্র্যাচ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর Symphony w160 এর বডিতে ব্যাবহার করা হয়েছে আলুমিনিয়াম বডি যা অনেকের মতে ভালোমানের। তবে আমার মতে আলুমিনিয়ান ব্যাবহারের ফলে এর সৌন্দর্যতা কিছুটা নষ্ট হয়েছে। আর এটাতেও ব্যাবহারিত হয়েছে নিম্ন মানের অ্যালুমিনিয়াম। এর ফলে হাত থেকে পড়ে গেলে অতি সহজেই ক্র্যাচ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।এছাড়া স্লিম এর ক্ষেত্রে Nokia কিছুটা পিছেয়ে। কারন r3 এবং w160 এ পর্যাপ্ত স্লিম রাখা হয়েছে যা 8 mm এর নিছি অন্য দিকে nokia তে রাখা হয়েছে 10 mm এর উপরে। তবে আপনি যদি হাতে নিয়ে দখেন তাহলে আপনি বুজতেই পারবেননা যে কোনটা কত mm।আর ওজনের দিক থেকে সবচেয়ে পাতলা ওয়ালটন।কালারের ব্যাপরে নকিয়াকে আমি সের বলব ।সাতটা কালার বাজারে পাওয়া যাচ্ছে Nokia Xl এবং পরে আবার সাতটা কালার পরিবর্তনেরও সুযোগ রেখেছে নোকিয়া। যা walton symphony তে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই ছলে।
অতএব এ পর্বের বিজয়ী NOkia XL। আর r3 এবং w160 এর মধ্যে দুটিকেই সমান ধরা যায়।
ক্যামেরা ফটো কোয়ালিটি©©©
আপনারা অনেকে হয়তো মনে করতে পারেন যে মেগা পিক্সেল যত হবে ক্যামেরা তত ভালো হবে। এধারনা সম্পূর্ণ ভুল। যার প্রমান হিসেবে আমি বলবো Nokia XL। মেগা পিক্সেল আপনার ছবিকে বড় করে কিন্তু আপনি যদি কম দুরুত্বে রেখে একই সাথে তিনটি মোবাইলে ছবি নেন তাহলে XL ই সবচেেয়ে ভালো ছবি তুলতে পারবে। Symphony w160 এর 13 mp হওয়ার কারনে কার যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে আপনাকে বলব GSM arena একবার বিজিট করে XL এর ফটো galaxy s5 এর সাথে সমান মেগা পিকসেলে তুলনা করে দেখতে। ইচ্ছা করলে oppo find 7 এর সাথে সমান মেগা পিক্সেলে তুলনা করতে পারবেন। Symphony w160 এ 13 mp ব্যাবহার করা হলেও এটাতে BSI সেন্সর ব্যাহারিত হয়নি ফলে ফ্লাসলাইট এক্স L এবং r3 এর চাইতে খারাপ হওয়ায় ভালো ছবি তুলতে পারবেননা।অবস্য দিনের বেলাতে w160 ভালো রেজুলেশনের ছবি তোলা যায়।অন্যদিকে r3 তে আছে 8 mp BSi ক্যামরা এবং কিছুটা ভালো মানের ফ্লাস।তবে xl এর ফ্লাসের চেয়ে ভালো না।BSI সেন্সর থাকার ফলে আপনি R3 এর মাধ্যমে রাতে ভালো ছবি তুলতে পারবেন।
সুতরাং এক কথায় বলা যায় আপনি যদি দিনে ভালো ছবি তুলতে চান তাহলে আপনার জন্য ভালো w160.আর BSI সেন্সর যুক্ত R3 কিনতে পারেন রাতে ভালো ছবি তোলার জন্য।আপনার ছবি তোলার দুরুত্ব যদি বেশী না হয় তাহলে XL নিতে পারেন আপনি।কারন কম দুরুত্বে XL রাতে এবং দিনে উভয় সময়েই ভালো ছবি তোলে। ফ্রন্ট ক্যামেরা তিনটি মোবাইলের ই ভালো মানের।
ক্যামেরা ভিডিও কোয়ালিটি VVV এদিক থেকে আপনি যে কোন একটা বেচে নিতে পারেন।কারন দিনের বেলাতে Walton r3 এবং symphony w160 দুইটি দিয়েই সমান মানের ফুল HD1080 ভিডিও রেকোডিং করতে পারবেন।কিন্তু রাতের বেলাতে ফ্লাস ভালো না হওয়ার কারনে w160 এ কিছুটা বেগ পেতে হবে।অন্য দিকে XL এ মাএ 420p ভিডিও রের্কোড করতে পারবেন এটা যদিও তেমন ভাল মানের না তবুও সাধারন মানের রের্কোড করা সম্ভব
Sorry এ পর্যায়ের বিজয়ী আমি কাউকে করতে পারলামনা। যার চাহিদা যে রকম সে সেটা নিতে পারেন।
এবার আসা যাক Display কোয়োলিটি
ডিসপ্লে কোয়ালিটির দিক থেকে আমার মনে হয় R3 সবচেয়ে এগিয়ে, যদিও ডিসপ্লে সাইজ অন্যান্যদের চেয়ে কিছুটা কম।R3 তে ব্যাবহার করা হয়েছে 4.7 inch (IPS OGS) গরিলা গ্লাস ডিসপ্লে।এছাড়া pure ব্ল্যাক Screen ব্যাহার করা হয়েছে HD রেজুলেশনের সাথে।যার ppi 312 যা এদামের মোবাইলে কল্পনার বাইরে।গরিলা থাকাতে ডিসপ্লেতে কোন দাগ বা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
অন্য দিকে w160 এ ব্যাবহার করা হয়েছে 5 inch HD রেজুলেশন ডিস্পপ্লে যার ppi 193 এর কাছাকাছি।গরিলা এবং IPs ogs না থাকায় আপনাকে ফোনটি কিছুটা হতাশ করে পারে।আর নোকিয়ে XL এ ব্যাহার করা হয়েছে 5 inch Fwvga,IPS LCD ডিসপ্লে।গরিলা না থাকলেও ডিসপ্লেতে দাগ পড়ার সম্ভাবনা কম।রেজুলেশন HD না হলেও কালার প্রোডাকশন এর দিক থেকে Symphony থেকে এগিয়ে XL। তাই আপনাকে বিডিও দেখার সময় হতাশ করবেনা।উল্লেখ্য আমি Symphony তে কিছুটা সাদাটে ভাব পেয়েছি।
অতএব এপর্বের বিজয়ী Walton Primo R3
অপারেটিং সিস্টেম
এখানে আমি সম্পূর্ণ ভাবে Walton primo R3 কে এগিয়ে রাখবো।আমার মত সবাই মনে হয় R3 কেই এগিয়ে রাখবেন।primo R3 এবং Symphony w160 দুইটিতেই বর্তমানে ব্যাবহার করা হয়েছে 4.2 জেলিবিন। আর নোকিয়াতে ব্যাবহারিত হয়েছে 4.1 জেলিবিন। primo r3 কে এগিয়ে রাখার একমাএ কারন হল এটি 4.4 কিটক্যাট আপডেট পাবে হয়তো ওয়ালটন রিলিজও করে দিছ। অন্য দিকে Symphony তাদের ফোন গুলোর জন্য এখন পযর্ন্ত কোন আপডেট রিলিজ করতে পারেনি,পারবে কিনা এটা নিয়ও সন্দেহ রয়েছে অনেকের মনে।আর নোকিয়া যদিও সফটওয়্যার আপডেট দিব তবে তা তাদের নিবস্ব ফ্লাটফরমে।
অনেকে হয়তো জেনে গেছেন নোকিয়ার Android ফোনগুলোতে আসল এন্ডয়েডের কিছু সীমাবদ্বতা রয়েছে। সে কারনে তাদের অফারেটিং সিস্টেম আপডেট দিলেও আগের সীমাবদ্বতা গুলে থেকেই যাবে। যে কারনে আমি Nokia XL কে R3 থেকে এগিয়ে রাখতে পারছিনা।
অতএব এ পর্বের বিজয়ী Walton Primo R3
পারফরম্যান্স এবং গেইমিং★★★
স্মার্টফোনর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল তার পারফরম্যান্স।বিশ্বের প্রায় সকল স্মার্টফোন রিভিউতে পারফরম্যান্স দেখার জন্য An Tu Tu ব্রেন্জমার্ক স্কোর দেখে থাকেন।An tu tu তে দেখা যায় তিনটি মোবাইলের মধ্যে সবচেয়ে বেশী স্কোর করেছে Primo R3।Primo R3 স্কোর করেছে 16000 এর কাছাকাছি। w160 করেছে 15900 এর কাছাকাছি এবং নোকিয়া করেছে 7000 এর কাছাকাছি।মিডিয়াটেক প্রসেসর যুক্ত GPU মালি 400 ব্যবহার করায় Primo R3 এবং w160 তে full hd গেইম খেলাতে কিছুটা ল্যাগ পেয়েছি তবে কালার প্রোডাক্টিভিটি r3 এর সবচেয়ে ভালো।Nokia XL এর স্নাপড্রাগন প্রসেসর যুক্ত আড্রিয়ানো GPU ব্যাবহার করা ফলেও কিছুটা ল্যাগ দেখা যাচ্ছে।ল্যাগকৃত গেইম গুলো সংখ্যা অত্যান্ত কম।অবস্য এইদামে গেইমিং ডিভাইস আশা করা মানে একটু বেশী চাওয়া বলে আমার মনে হয়।
তবে সাধারন যত HD গেইম রয়েছে সবগুলো তিনটি মোবাইলেই কোন ল্যাগ ছাড়া খেলতে পারবেন।
অতএব, বুজতেইতো পারতেছেন পারফরম্যান্স এর দিক থেকে কোনটিকেই এগিয়ে রাখা সম্ভব না।
ব্যাটারি ব্যাকআপ:∞
এখানে সবচেয়ে এগিয়ে নোকিয়া XL.।8-10 ঘন্টা ব্যাকআপ পাবেন এটিতে।
অন্য দিকে R3 এবং 160 এ মাএ 6 ঘন্টা ব্যাকআপ পাবেন।একটানা গেইম খেললে 3 ঘন্ট পাবেন।
সুতরাং এপর্বের বিজয়ী XL
অনেক লিখালিখি করলাম। এখন অবস্য অনেকে বুজতে পেরেছেন কোন টা ভালো হবে আপনার জন্য।
আসলে এটা নিভর্র করে চাহিদার উপর। ধরেন আপনি যদি একজন ফটোগ্রাফার হন তাহলে আমি আপনাকে বলব 160 নিতে।শুধুমাএ দিনের ক্ষেেএ।
আবার আপনি যদি একটু বেশী ফ্যাশনসম্মত এবং বেশী দিন ধরে টিকে থাকবে এরকম মোবাইল পেতে চান তাহলে XL।
আবার আপনি যদি সব কিছুর কম্ভিনেশন এবং লেটেস্ট ফিচার গুলো পেতে চান তাহলে R3 নিতে পারেন।
এখন চিন্তা করে দেখেন কোনটা আপনার জন্য ভালো হবে।
অবস্য আমি যে সব বিষয় নিয়ে আলোছনা করেছি সেখানে সবচেয়ে বিশী এগিয়ে আছে XL। তাই আমার মতে XL ই সেরা।
ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য। রিভিউটি সম্পর্কে আপনার কোন মতামত থাকলে কমেন্ট করুন।