নিজেকর ছবি সুন্দর করে তোলার কিছু টিপস, ট্রিকস এবং কৌশল
একেবারেই
লাজুক বা ক্যামেরা ভীতি না থাকলে কম বেশি সকলেই ছবি তুলতে বেশ পছন্দ করেন।
আবার অনেকের ছবি তোলা বেশ পছন্দের হলেও নিজের ছবি সুন্দর আসে না দেখে মন
খারাপ করে ছবি তোলাই বন্ধ করে দেন। কিন্তু ছবি সুন্দর আসা না আসা কিন্তু
ক্যামেরার দোষ নয়। সমস্যা আপনারই।
না, এখানে আপনি সুন্দর-অসুন্দর কিছুই বলা হচ্ছে না, ছবি সুন্দর আসার
রয়েছে কিছু কারসাজি। আপনাকে জেনে নিতে হবে কীভাবে আপনাকে একটু স্লিম দেখবে,
মুখের ভঙ্গি কেমন থাকলে আপনাকে আরও বেশি আকর্ষণীয় লাগবে। আর এতে করেই
সুন্দর উঠবে ছবি। আজ চলুন শিখে নেয়া যাক ছবিতে সুন্দর দেখানোর সহজ কিছু
কৌশল।
১) ছবিতে চোখ বন্ধ আসে? তাহলে এক কাজ করুন চোখটা বন্ধই রাখুন। ক্যামেরার
ক্লিকের সাথে সাথে চোখ খুলে দিন। দেখবেন ছবিতে আর চোখ বন্ধ আসবে না।
২) ছবিতে মুখের নিচের অংশ অনেকের বেশ ভারী আসে। অনেকের তো ভাঁজ দেখা
যায়। এই সমস্যা দূর করতে মুখটা সামনের দিকে একটু বাড়িয়ে দিন। এতে করে গলা
এবং মুখের নিচের অংশে একটু টানটান ভাব আসবে এবং ছবিতে মোটেও মুখের নিচের
অংশ ভারী দেখাবে না।
৩) ছবি তোলার সময় মুখটি অতিরিক্ত হাসিহাসি হয়ে যায়? একটি উপায় আছে এই
সমস্যা দূর করার। দাঁতের পাটির মাঝে ফাঁক রাখবেন না। এমনভাবে হাসুন যেনো
জিহ্বা দেখা না যায়। এতে করে হাসিটি স্বাভাবিক ও ন্যাচারাল আসবে।
৪) নিজের ভ্রুয়ের দিকে নজর দিন। শুধুমাত্র ভ্রুয়ের অভিনয়ে ছবি অনেক
সুন্দর আসে। ভ্রু কীভাবে থাকলে আপনাকে সুন্দর দেখায় তা খুঁজে বের করুন।
মেয়েরা ভ্রু ভালো করে এঁকে নিন। এতে করে মুখের একটি সঠিক আঁকার আসবে এবং
ছবি সুন্দর উঠবে।
৫) অনেক সময় চোখের মনি সাদা ধরণের আসে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ছবি
তোলার ঠিক আগে একটু উজ্জ্বল আলোতে তাকিয়ে নিন। এতে চোখের পিউপিল সংকুচিত
হয়ে আসে যার ফলে মনি সাদা হওয়ার সমস্যা থাকে না।
৬) আপনি কোন এঙ্গেলে দাঁড়ালে আপনাকে একটু শুকনো দেখায়, মুখের কোন পাশের
ছবি বেশি ভালো আসে তার দিকে লক্ষ্য রাখুন। এইসকল জিনিস মেনে চললে ছবি
আপনাআপনিই সুন্দর আসবে।
৭) আপনার যে ছবিটি সবচাইতে সুন্দর এসেছে সেই ছবিতে কীভাবে দাঁড়িয়েছিলেন
বা কিভাবে মুখভঙ্গি করেছিলেন তা ভালো করে দেখুন এবং সেভাবেই ছবি তোলার
প্র্যাকটিস করুন। এতে সব ছবিই সুন্দর আসবে।
সহজে ভালো ছবি তোলার – ১৫ টা টিপস !!!
১. UV-ফিল্টার টাকা নষ্টের একটা খুব সহজ আর জনপ্রিয় উপায়। মনে হতে পারে,
আর দোকানদারও আপনাকে বোঝাবে, ফিল্টার খুব কাজের জিনিস। একটা লেন্স যখন
ডিজাইন করা হয়, তখন অনেক হিসেব নিকেশ করে তারপরে করে। তারা চায় যত কম সম্ভব
glass ব্যবহার করতে; কারন একেকটা glass বাড়লে, sharpness কমতে থাকে। আর,
UV-ফিল্টার লাগিয়ে আপনি হুট করে একটা glass element বাড়িয়ে দিলেন। ফিল্মের
যুগে UV ফিল্টারের কাজ ছিল অতিবেগুনী রশ্মি যেন ফিল্মে তোলা ছবিকে ঘোলা বা
নীলাভ না করে ফেলে। আজকের ডিজিটাল সেন্সরের যুগে এটা একটা বাড়তি ঝামেলা।
মনে করতে পারেন, যে ফিল্টার লাগিয়ে লেন্সকে ধুলাবালি থেকে বাঁচালাম। কিন্তু
সেজন্য তো লেন্স কাভার আছে।
২. Lens-hood তেমন কোনও কাজের জিনিস না। বেশিরভাগ pro-user-ই ব্যবহার করেন না। বাড়তি ঝামেলা।
৩. বরং বাড়তি ১/২ টা লেন্স-ক্যাপ কিনুন; সস্তার ভিতরে, নন-ব্র্যান্ড। এটা আপনার বহু কাজে লাগতে পারে।
৪.
ক্যামেরাকে নিজের “সন্তানের” মতন treat করবেন না। মোটামুটি মানের একটা
ক্যামেরাকে সাধারণত: টুকিটাকি ঝামেলা, ছোটখাট আছাড়, rough handling এর কথা
মাথায় রেখেই বানানো হয়। ক্যামেরার ত্বকের যত্ন নিয়ে না ভেবে বরং ভালো ছবির
কথা ভাবুন। ক্যামেরা একটা কাজের যন্ত্র, কাজের বিনিময়ে (অর্থাৎ, ছবি তুলে)
ক্যামেরার দাম উশুল করুন। অনেককে দেখি, যত্নের চোটে ক্যামেরা নিয়ে ঘর থেকেই
বের হয় না। তাহলে ক্যামেরাটা কিনে লাভ কি হোল?
৫. অনলাইনে অন্যের
ছবি নিয়ে অযথা ঝগড়া না বাড়িয়ে, ওই সময়টা হয় ক্যামেরা নিয়ে বাইরে বের হন,
নয়তো বিভিন্ন tutorial পড়ে/দেখে নিজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যান। আপনার ছবি নিয়ে
কেউ পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া বাজাতে চাইলে, তাকে আঁতেল বা আনাড়ি একটা কিছু ধরে
নিয়ে এড়িয়ে যান। মার্ক টোয়েনের একটা কথা “মূর্খ লোকের সাথে কক্ষনো তর্কে
নেমো না, কারণ সে তোমাকে টেনে নিজের স্তরে নামাবে, এরপর অভিজ্ঞতা দিয়ে
তোমাকে হারিয়ে দেবে।”
৬. কোথাও যাচ্ছেন? gears খুব কম নেন, যেগুলা না
হলেই না। যাতে আপনি কারো সাহায্য ছাড়াই চলতে পারেন। অনেক কিছু বয়ে বেরিয়ে
কম শুট করার চেয়ে, অল্প গিয়ার দিয়ে বেশি শুট করা অনেক বেশি বুদ্ধির কাজ।
৭.
সহজে শুট করতে zoom lens ব্যবহার করুন; আর prime lens ব্যবহার করলে একটু
চিন্তাভাবনা করে শুট করতে হবে। সুতরাং যা হাতের কাছে আছে, সেটা নিয়েই বের
হন।
৮. ভালো ক্যামেরা হলেই ভালো ছবি তুলতে পারবেন না। বরং, আপনি যদি
জানেন কিভাবে ভালো ছবি তোলা যায়, তবে ভালো ক্যামেরা আপনার সেই কাজ কে সহজ
করে দিবে।
৯. যেই ক্যামেরা নিয়েই বের হন না কেন, ক্যামেরার মোটামুটি
খুঁটিনাটি জেনে নিন। এজন্য, ম্যানুয়ালটা আপনার সবচেয়ে বড় বন্ধু। আপনার
ক্যামেরার একটা PDF ম্যানুয়াল সবসময় পিসিতে রাখুন। মাঝে মাঝেই খুলে পড়ুন।
১০. ক্যামেরা নিয়ে আপনি যখন বাইরে, তখন সবসময় রেডি থাকুন। খুব প্রয়োজন
না হলে লেন্স-ক্যাপ লাগিয়ে রাখবেন না, আর ক্যামেরা অফ করে রাখবেন না। মাত্র
৫ সেকেন্ড একটা ভালো ছবি তুলতে না পারার জন্য যথেষ্ট।
১১. P-mode
আপনার বড় একটা বন্ধু হতে পারে। শুধু, বড় করে বলার জন্য M-mode ব্যবহার
করবেন না। একটা ভালো ছবিই মুখ্য। আপনি কি দিয়ে বা কিভাবে তুললেন সেটা খুবই
গৌণ।
১২. প্রয়োজনে ISO বাড়িয়ে ছবি তুলুন। আর সবচেয়ে ভালো হয় যদি auto-ISO আপনি কাজে লাগাতে পারেন।
১৩. Auto-ISO আপনার বিরাট বন্ধু হতে পারে। কিন্তু, বন্ধু থেকে কাজ বাগাতে হয় কিভাবে, জানেন তো। বন্ধুকে সময় দিন, বন্ধুকে জানুন।
১৪. প্রথমদিকে, সবসময় rule-of-3rd ব্যবহার করুন। এটা আপনার ছবির কম্পোজিশন গুছাতে অনেক সাহায্য করবে।
১৫.
প্রচুর ছবি তুলুন; তবে বুঝে শুনে। একটা জিনিসের ছবি বিভিন্ন ঢঙে,
ক্যামেরার বিভিন্ন সেটিঙে ছবি তুলুন। তারপরে পিসিতে দেখুন, বুঝুন। কোন
ছবিটা ভালো হোল, আর কেন ভালো হোল। তবে যা-তার ছবি তুলে নিজের সময়, মেধা
নষ্ট করবেন না। যে ছবি ক্যামেরাতেই দেখে বুঝতে পারছেন, বাজে (অস্পষ্ট,
মূল-বিষয় কাটা পড়েছে, ঠিকমত এক্সপোজ হয়নি ইত্যাদি) হয়েছে, সেটা ক্যামেরাতেই
মুছে ফেলেন। পিসিতে নিয়ে সময় নষ্ট করার কোনও মানে হয় না।
Credit to – খালেদ মনসুর
Collected Post
তথ্যসুত্র সংগ্রহঃ
এখানে