এখনকার কম্পিউটারের বাজার বেশ ডাইভারস বলা যায়। হাজার রকমের অপশন আছে প্রায় সব ধরনের হার্ডওয়ারে। বিক্রেতারা যেটা বিক্রি করেন সেটাকেই সেরা বলেন সবসময়। আর কম্পিউটার কেনার সময় সবচেয়ে বেশী কনফিউজড হতে হয় কম্পিউটার প্রসেসর নিয়ে। কেউ প্রসেসরের মডেলের নাম্বার দিয়ে সিলেক্ট করেন আবার কেউ দাম দেখে। আবার আমাদের মধ্যে এরকমও একটা ধারনা আছে যে প্রসেসরের দাম বেশী হলে ক্ষমতাও বেশী হবে। কথাটা আংশিক সত্য হলে আবার এমনও হতে পারে যে যেসমস্ত ফিচারের কারণে প্রসেরেরর দামটা বেশী ছিল, সেই ফিচারগুলো আমাদের কোন কাজেই আসবে না। আর হাজার রকমের মডেলের ভিড়ে হারিয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়াটা বেশ স্বাভাবিক। তাই আজ কম্পিউটারের প্রসেসর নিয়েই একটা আর্টিকেল দিচ্ছি। আশা করি আপনার ভবিষ্যৎ কম্পিউটার শপিংএ একটি হলে কাজে আসবে।
Intel Processor
এই রিভিউ তে আমরা শুধু ইন্টেল প্রসেসরের উপরেই কথা বলব। বাজারে এখন ইন্টেলের নানা ধরনের প্রসেসর পাওয়া গেলেও আমরা শুধু কনজিউমার প্রসেসর বা সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য যেসব প্রসেসর তৈরি করা হয়েছে ওগুলো নিয়েই কথা বলব। আর ইন্টেলের কথা বলতে গেলেই চলে আসে Core i3, Core i5 এবং Core i7 – এর তিনটি প্রসেসরের মডেলের কথা। যারা কম্পিউটার সম্পর্কে হাল্কা জ্ঞানও রাখেন তারাও এই প্রসেসরগুলোর কথা শুনেছেন এবং বাজারে এই তিনটি প্রসেসরের অধিক চলন আছে।
সোজা ভাবে বলতে গেলে বলা যায় Core i7 এদের সবচেয়ে ভাল প্রসেসর আর দামেও বেশী অন্য দুটির তুলনায়। তবে ব্যাপারটা আসলেই নির্ভর করে আপনার প্রয়োজনের উপর। প্রসেসর আজকাল নর্ভর করে এতে কতগুলো কোর আছে সেতার উপর। Core i3 মানেই যে এতে তিনটি কোর আছে আর i7 মানেই যে এতে ৭টি কোর আছে একথা ভাবা ভুল। Core i3 প্রসেসরে কর্মের সংখ্যা থাকে দুটি আর Core i5 এ কোর এর সংখ্যা মডেল ভেদে ২টিও হতে পারে আবার ৪টিও হতে পারে। সব Core i5 প্রসেরেরই যে ৪টি কোর আছে কথাটা ভাবা ভুল। একই ভাবে i7 এ কোর থাকতে পারে ২টি থেকে ৮টি পর্যন্ত এবং মডেল এবং দাম ভেদে কর্মের সংখ্যা উঠানামা করবে। আর স্বাভাবিকভাবেই কর্মের সংখ্যার উপর আপনার কম্পিউটারের প্রসেসিং ক্ষমতা নির্ভর করবে। আর তারপরেই আসছে ক্লক স্পিড অর্থাৎ কত গিগাহার্টজের প্রসেসর। গিগাহার্টজ বেশী হলে স্পীড বেশী হবে সাধারণ অর্থেই।
প্রসেসর কিনতে গেলে এখন আর একটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ন আর সেটি হলে প্রসেসরে Turbo Boost ফিচারটি আছে কিনা। এর ফিচারটি থাকলে আপনি আপনার প্রসেসররের ক্ষমতা প্রয়োজন পড়লে একটু বাড়াতে পারবেন কোন বিশেষ ধরনের কাজের জন্য। তবে সব প্রসেসরেই এই ফিচার থাকেনা। Core i5 এর কিছু মডেল আর Core প্রায় সব মডেলগুলোতে এই ফিচার আছে এখন পর্যন্ত।
আর Turbo Boost এর পরেই যে ব্যাপারটা প্রসেসর কিনার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ন সেটা হলো প্রসেসরের Cache সাইজ। খেয়ার করে দেখবেন প্রসেসরের প্যাকেটের গাইয়ে অনেক সময় লেখা থাকেব “8MB Cache” অথবা “16MB Cache”। Cache সাইজ যত বড় হবে আপনার প্রসেসিঙয়ের ক্ষমতা ঠিক ততটাই বাড়বে। এর কাজ হলো অনেকটা RAM এর মত। অনেকেই জানেন RAM বেশী হোলে কম্পিউটারের গতি বাড়ে। Cache এর কাজ হল আপনার কম্পিউটারে যে ধরনের প্রসেসিং এর কাজগুলো বার বার হয় তা Cache মেমোরি তে সেভ করে রাখে এবং বার বার রিপিট না করেই প্রসেস করে ফেলে। RAM এর কাজ যেমন হার্ডড্রাইভের সাথে ইন্টারেকশন কমানো ঠিক তেমনই Cache এর কাজ হলো RAM এর সাথে ইন্টারেকশন কমানো। সাধারণত Core i3 প্রসেসরে মেগাবাইট Cache  থাকে আর i5 এ থাকে 6MB এবং i7 এ থাকে ৮ মেগাবাইট বা তারও বেশী কিছু।
আর হ্যাঁ আরও একটি ব্যাপার, প্রসেসর কেনার সময় Hyper Threading ফিচারটি আছে কিনা খেয়াল করে নিবেন। এই ফিচার থাকলে প্রসেসরের সবগুলো একসাথে কাজ করতে পারবে আর না থাকলে একবারে শুধু একটি কোরই কাজ করবে।
আশা করি প্রসেসর বেসিক নিয়ে আমাদের এই ছোট পোস্টটি আপনাদের কাজে আসবে প্রসেসর কেনার ক্ষেত্রে। যারা নতুন কম্পিউটার কিনতে যাচ্ছেন আর প্রসেসর নিয়ে কনফিউজড তারা এই ব্যাপারগুলো ফলো করতে পারেন।
ভাল থাকুন।
 
Top