0

এন্ড্রয়েড মোবাইল বা ট্যাবলেট চার্জিং পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত

আমাদের অনেকেরই চার্জিং সম্পর্কে অনেক রকমের ধারনা বা জ্ঞান রয়েছে। আর মোবাইল কেনার পর দোকানদারের বলা একটি কথা- ‘সেটটি বাসায় নিয়ে ৮ ঘণ্টা চার্জ দিবেন’ এটি একটি সাধারণ বাক্য। কিন্তু সকল ধারনাই তোহ আর ঠিক হবে না। এর মধ্যে রয়েছে অনেক ভুল ভ্রান্তি। তাই আজকে আপনাদের এন্ড্রয়েড চার্জিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতেই এ পোস্ট। কারণ চার্জিং এর ওপর আমাদের প্রিয় এন্ড্রয়েড মোবাইলটির সুস্থতা অনেকাংশেই নির্ভরশীল।
মোবাইল বা ট্যাবলেট চার্জিং সম্পর্কে বিস্তারিত
পোস্টটিকে কয়েকটি বিভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. মোবাইল ক্রয় পরবর্তী
২. নিয়মিত ব্যবহারকালীন সময়ের বিষয়াবলী
৩. বিশেষ প্রয়োজনকালে চার্জ
৪. দ্রুত চার্জ করবার ক্ষেত্রে
৫. পাওয়ার ব্যাঙ্ক দ্বারা চার্জের ক্ষেত্রে
৬. চার্জার দ্বারা চার্জের ক্ষেত্রে(বৈদ্যুতিক লাইন এবং ইউএসবি পোর্ট)
৭. স্মার্টফোন চার্জিং এর গুরুত্বপূর্ণ টিপস
৮. চার্জ বাঁচাতে গ্রহণীয় সতর্কতা
দরকার হলে পুরোটা পড়তে পারেন আবার আপনার পছন্দসই অংশ পড়তে পারেন। তোহ শুরু করা যাক!
১. মোবাইল ক্রয় পরবর্তীঃ-
মোবাইল ক্রয় করে নিম্নোক্তভাবে আপনার সেটটিকে প্রথমবার চার্জ করুন-
ক) প্রথমেই আপনার পছন্দের সেটটিতে থাকা সম্পূর্ণ চার্জ শেষ করে ফেলুন আপনার পছন্দসই কাজের মাধ্যমে।
খ) এবার আপনার সেটটিকে চার্জে দিয়ে দিন এবং ১০০ ভাগ চার্জ করুন।
গ) সময় স্বল্পতা থাকলেও প্রথমবার সেটটিকে অবশ্যই ভালোভাবে চার্জ দিন।
ঘ) দোকানদারের মনগড়া কথায় বিশ্বাস করবেন না।
২. নিয়মিত ব্যবহারকালীন সময়ের বিষয়াবলীঃ-
চার্জ পার্সেনটেজঃ এটি চার্জিং এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর ওপর নির্ভর করেই আমরা আমাদের সেটটিকে চার্জ করি। তোহ আপনার সেটের চার্জ ২০% বা তার চেয়ে কমে গেলেই আপনি স্বাভাবিক চার্জিং করতে পারেন  এতে কোন সমস্যা হবে না। তবে মোবাইলের চার্জিং এর বার্তা যা সাধারণত চার্জ ১৫% এ গেলে হয় তা আসার পরেই চার্জ দেয়া ভালো।
ব্যাটারী কেলিব্রেশন অ্যাপঃ এধরণের বহু অ্যাপ রয়েছে। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল DU Battery Saver এবং Battery Doctor। তবে সকল সেটে তা সমানভাবে কাজ নাও করতে পারে আবার কোন কোন সময় উল্টো চার্জও নষ্ট করতে পারে। আপনি ব্যবহার করে দেখতে পারেন সুফল পেলে ভালো নতুবা আনইন্সটল করে দিবেন। তবে ব্যবহার করলে Premium বা Pro ভার্সন ব্যবহার করাই ভালো। ব্যাটারি সেভের জন্য আপনার সামান্য সচেতনতাই যথেষ্ট।
৩. বিশেষ প্রয়োজনকালে চার্জঃ-
মনে করুন বাইরে কোথাও লং জার্নিতে যাচ্ছেন মোবাইলে ফুল চার্জ করে নিতে চাচ্ছেন। হাতে সময় কম, আবার শখের মোবাইলটিতে চার্জ আছে ৫০%। এ অবস্থায় আপনি কি করবেন?
করনীয়-
ক) সর্বপ্রথম সেট অফ করে ফেলুন। অফ করতে না চাইলে অন্তত Air Plane Mode অন করুন। তবে অফ করলেই বেশী ভালো। অফ করলে আপনার মোবাইলের ভাইব্রেশন হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
খ) এবার মোবাইলে চার্জার প্লাগ-ইন করে সুইচ অন করুন।
গ) বারবার চার্জ কতটুক হল তা দেখার দরকার নেই। একবারে ১ ঘণ্টা বা তার বেশী সময় পর দেখুন। সম্পূর্ণ চার্জ হবার পর মোবাইল অন করুন/General Mode অন করুন।
৪. দ্রুত চার্জ করবার ক্ষেত্রেঃ-
মোবাইল বা ট্যাবলেট দ্রুত চার্জ করবার প্রয়োজন পড়তেই পারে। এর জন্য আমাদের কিকরা উচিৎ? আসুন জেনে নিই-
ক) মোবাইল বা ট্যাবলেটটির জন্য মেনুফ্যাকচারার প্রদত্ত চার্জার ও ক্যাবল ব্যবহার করুন
খ) চার্জ করবার পূর্বে সেট অফ করে ফেলুন। অফ করতে না চাইলে অন্তত Air Plane Mode অন করুন। তবে অফ করলেই বেশী ভালো। অফ করলে আপনার মোবাইলের ভাইব্রেশন হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
গ) সেটের অপ্রয়োজনীয় সকল অ্যাপ ও অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ করে দিন। বিশেষ করে স্ক্রিন ব্রাইটনেস একেবারে কমিয়ে দিন।
ঘ) চার্জিং এর সময় অহেতুক বারবার চার্জ কতটুক হল তা চেক করবেন না। এতে করে চার্জ হতে দেরী হয়।
৫. পাওয়ার ব্যাঙ্ক দ্বারা চার্জের ক্ষেত্রেঃ-
পাওয়ার ব্যাংক আমাদের সকলের কাছেই পরিচিত একটি শব্দ। এর রয়েছে বিভিন্ন প্রকার। পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে আরেকদিন লিখব। আজ জেনে নেই পাওয়ার ব্যাংক দিয়ে চার্জ করার ক্ষেত্রে করনীয়ঃ
ক) প্রথমে পাওয়ার ব্যাঙ্কটি অন করুন।
খ) অতঃপর পাওয়ার ব্যাঙ্কের ইউএসবি পোর্টটি মোবাইলের সাথে কানেক্ট করুন।
গ) পাওয়ার ব্যাংক দিয়ে চার্জকালে মোবাইলটি প্রয়োজন ছাড়া ব্যবহার করবেন না এবং পকেটে রাখবেন না।
৬. চার্জার দ্বারা চার্জের ক্ষেত্রে(বৈদ্যুতিক লাইন এবং ইউএসবি পোর্ট):-
ক) চার্জারটি প্লাগ ইন করুন।
খ) এবার মোবাইলের সাথে কানেক্ট করুন।
বি.দ্র. পছন্দের সেটটি সর্বদা সমতল সাথে উন্মুক্ত অবস্থায় রাখুন। তাপমাত্রার সহনশীলতার দিকে লক্ষ রাখুন।
৭. স্মার্টফোন চার্জিং এর গুরুত্বপূর্ণ টিপসঃ-
ক) মোবাইলটি সর্বদা শীতল স্থানে রাখুন। উত্তপ্ত স্থান (যেমনঃ চুলা) এর কাছে বা অত্যধিক শীতল স্থানে রাখবেন না।
খ) বর্তমানে বেশ কিছু সেটে Wireless Charging বা তারহীন চার্জিং সুবিধা রয়েছে। তবে এটি পরিহার করাই উত্তম।
গ) মাসে শুধুমাত্র একবার ব্যাটারী কেলিব্রেশন করুন। অর্থাৎ চার্জ সম্পূর্ণ শেষ করে নতুন করে ফুল চার্জ করুন।
ঘ)কখনও চার্জ শূন্যের কাছাকাছি বা শূন্য করবেন না(‘গ’ নং বাদে)। কারণ এতে ব্যাটারী অত্যধিক অস্থির হয়ে পড়ে যা সেটের ক্ষতি করতে পারে।
ঙ) বেশ কিছু মোবাইলে ধ্রুত চার্জিং সুবিধা রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজন ছাড়া এটি ব্যবহার না করাই শ্রেয়।
চ) মোবাইলের জন্য মেনুফ্যাকচারার কর্তৃক তৈরি কৃত চার্জার ব্যবহার করতে চেষ্টা করুন। কারণ এটি আপনার মোবাইলটিকে অধিকতর সুস্থ রাখবে।
৮. চার্জ বাঁচাতে গ্রহণীয় সতর্কতাঃ-
ক)  সেটের ব্রাইটনেস যতটা সম্ভব কমিয়ে রাখুন। অটো মুডে না রাখাই ভালো। কারণ এতেও স্ক্রিন ব্রাইটনেস যথেষ্ট বেশী থাকে।
খ) অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস ও ফিচার বন্ধ রাখুন। এক্ষেত্রে Greenify আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
গ) ইন্টারনেট আপনার সেটের প্রচুর চার্জ খায়। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতন হন।
ঘ) প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল অন করার অভ্যাস অনেকেরই আছে। এটি পরিহার করুন।
ঙ) গেমস (বিশেষত হাই গ্রাফিক্সের) খেলার ক্ষেত্রে সচেতন হন।
চ) বেশী Widget ব্যবহার না করাই শ্রেয়।
ছ) প্রয়োজন বোধে Battery Callibration App ব্যবহার করুন। Battery Callibration App হিসেবে  DU Battery Saver Pro ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন

আশা করি পোস্টটি ভালো লেগেছে। আবার নাও লাগতে পারে যেহেতু অনেক লম্বা পোস্ট তবে তাও দুঃখ কষ্ট ভুলে ভালো থাকুন এটাই আমাদের প্রত্যাশা। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা!

Post a Comment

 
Top