0
আমাদের প্রত্যেকের কাছে ছেলে মেয়ে আছে। আমাদের সন্তান টি যখন ভূমিষ্ঠ হয় তখন আমাদের কাছে অনেক খুশি লাগে। বিশেষ করে মা বাবার কাছে মনে হয় এ যেন ভালোবাসার প্রতিক। এরপর থেকে শুরু হয় মা বাবার আপ্রান চেষ্টা ছেলে অথবা মেয়েটিকে কিভাবে আস্তে আস্তে বড় করে তুলবেন। বড় করে মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন, এ যেন মনে হয় এক মহা সাগর পাড়ি দেওয়া।
কোন মা বাবা চায় না যে তার সন্তান টা মানুষের চোখে ছোট হয়ে থাকুক। আপনার সন্তানটিকে ভাল ভাবে মানুষের মত গড়ে তুলতে শুধু আপনাকে দিতে হবে সঠিক দিক নির্দেশনা। আপনি যদি আপনার সন্তানটিকে যদি সঠিক নির্দেশনা দিয়ে যান সে ছোট কাল থেকে তাহলে আপনি নিশ্চিত হতে থাকুন যে আপনার সন্তান টি মানুষহিসেবে গড়ে উঠছে।
সঠিক ভাবে গড়ে উঠা মানে কিঃ
--------------------------
সঠিক ভাবে বলতে যেটা বুঝি আমরা সরল, ভাল, উন্নতির বা সত্য পথ। যে পথে গেলে আপনার সন্তানটিকে কখনো কারো ধারস্ত হতে হবে না। নিজে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে, নিজেই নিজেকে নিয়ে ভাবতে পারবে, হয়ত এমন একদিন আসবে আপনার ছেলেটিকে দেখে মনে হবে- অন্যদের ছেয়ে আপনার ছেলেটিকে আলাদা মনে হচ্ছে। হয়ত এমন সময় আসবে আপনার ভিতর থেকে একটি দির্ঘ শ্বাস আসবে ঠিক এমন সময় মনে হবে যে এই ছেলেকে একদিন মানুষ করার জন্য জীবন নামের মহা সমুদ্র পাড়ি দিতে হয়েছ। পাড়ি দিতে হয়েছে কয়েক দশক , ঠিক তখনি মনে হবে আপনার সোনার সন্তানটিকে দেখে আমার ছেলে কে আমি সঠিক পথ দেখিয়ে সঠিক মানুষ হিসেবে গড়তে পেরেছি।
একটি সন্তাকে মানুষ করতে মা বাবা দুজন কে তাদের সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হয়। মায়ের দায়িত্ব টা মাকে এবং বাবার দায়িত্বটা বাবাকে পালন করতে হবে। যে দায়িত্বটা খুবই সহজ যদি সেটা পালন করেন কিন্তু যদি সেটা পালন না করেন তাহলে অনেক কষ্ট বা কঠিন মনে হবে। একটা সন্তানের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মানুষ গড়ার কারিগর তার মা এবং বাবা। এক্ষেত্রে মায়ের দায়িত্ব টা সবসময় খুব বেশি।
মায়ের দায়িত্বঃ
-----------------
একটি সন্তানকে মানুষ করতে হলে মাকে তার সঠিক দায়িত্ব সফল ভাবে পালন করতে হবে। তার পর তার বাবার কথা আসবে। মা যদি না চান তার সন্তানকে কোন দিনও বাবা সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন না। তাই বলে বাবার দায়িত্ব যে একেবারে নাই তা কোনও দিনও মনে করা যাবে না। বাবার চেয়ে মায়ের দায়িত্বটা বেশি এবং সর্বপ্রথম সঠিক ভাবে পালন করতে হবে।
যেমন দেখুন মায়ের কিছু দায়িত্ব এখানে তুলে ধরবঃ
→ সর্বপ্রথম সন্তানের শারীরিক দিক সব সময় বিবেচনায় রাখতে হবে, যা শিশু কাল থেকে শুরু করে কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পোঁছানো পর্যন্ত।
→ সবসময় সন্তানের তার রুটিন অনুযায়ী পড়ালেখা থকে শুরু করে খেলা ধুলা পর্যন্ত সব কিছু নির্দারন করতে হবে।
→ বর্তমানে মোবাইল এখন মানুষের জীবনের সঙ্গী। আপনার সন্তানকে কোন বয়সে মোবাইল ব্যবহার করতে দেবেন এবং তাকি মাল্টিমিডিয়া নাকি নরমাল সেটা আপনাকে সঠিক সিদ্দান্ত নিতে হবে। এমনিতে বর্তমানে যে যুগ আসছে আমি মনেকরি SSC শেষ করার আগে মোবাইল দেওয়া কোন ভাবে উচিত হবে না।
→ কোন বয়সে আপনার সন্তানের জন্য একটা কম্পিউটার প্রয়োজন। এবং তার ব্যবহার বিধির উপর নজরদারি করতে হবে কঠোর ভাবে।
→ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাসায় থাকা আবস্থায় মাকে তার সন্তানের সবকিছুর প্রতি একটি সঠিক নিয়ম নীতি মা কে নির্ধারন করে দিতে হবে।
→ এমন কোন নিয়ম বা নীতি নির্ধারন করা যাবে না যা আপনার সন্তানের মানসিক চাপ সৃষ্টি করে।
→ সন্তানকে কক্ষনো মায়ের অবাদ্ধ হতে দেওয়া যাবে না। সেটা হোক যে কোন বিষয়ে।
→ সন্তানকে যথা সম্ভব খুশি রাখতে হবে। আপনি যত শাসন করেন না কেন সন্তানের মানসিক দিক সব সময় ভাল রাখতে হবে। সন্তানের মানসিকতা খারাফ হয়ে গেলে আপনাকে এক সময় প্রস্তাতে হবে- কোন ভুল নাই।
→ মাজে মাজে কিছু সময় মা, বাবা, সন্তান সবাই মিলে গল্প গুজব করুন।
→ সব সময় তাকে সব কিছু তার ইচ্ছে মত করতে দেওয়া যাবে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে তার ইচ্ছাকে প্রাদান্য দিতে হবে।
→ নিজের পারিবারিক রাগ কখনও সন্তানের উপর জারবেন না।
বাবার দায়িত্বঃ
-----------
একটি সন্তানকে সঠিক ভাবে গড়ে তুলতে মায়ের যেমন দায়িত্ববোদ বেশি তেমনি বাবার ও সঠিক ভাবে দায়িত্ববোদ থাকতে হবে।
দেখুন আমি এখানে বাবার কিছু দায়িত্ব তুলে ধরবঃ
→ আপনাকে সর্বপ্রথম একটা জিনিস প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খেয়াল করতে হবে আপনার সন্তানটি বাহিরে কার সাথে মিশছে, তার বন্ধু বান্ধব কারা। কোন খারাফ ছেলের সাথে কোন ভাবে মিশতে দেওয়া যাবে না।
→ আপনাকে সব সময় তার বাহিরের দিক নির্দেশনা দিয়ে যেতে হবে।
→ সন্তানের ক্লাসের উপস্থিতির নিয়মিত খবর নিন। সে কি ক্লাসে উপস্থিত হচ্ছে নিয়মিত।
→ আপনার সন্তানটিকে নিয়ে ছুটির দিনে ঘুরতে যান কোথাও। দেখন আপনার সন্তানের মানসিকতা প্রেশ মনে হচ্ছে।
→ সব সময় আপনার সন্তানের মানসিকতার খোঁজ নিতে থাকুন। তার থেকে নয় তার দেখে বুজে নিতে হবে আপনাকে তার মানসিকতা কতটুকু ঠিক আছে। তার মানসিকতা নিয়ে যখনি আপনার সন্দেহ হবে তখনি আপনাকে তার মানসিকতা ঠিক করে নিতে হবে। তার সাথে খোলা মেলা আলাপ করতে পারেন।
→ সন্তানকে তার ন্যায্য অধিকার কিন্তু দিতে হবে।
→ আপনার সন্তানকে সব সময় সপ্ন দেখাতে বুলবেন না। এরকম- একাজ টা করো, একাজ টা তোমার অনেক ভালো হবে। একাজ টা করোনা এটা করলে অনেক ক্ষতি হবে।
এ দুটি কথা আপনি চিরন্তন মনে রাখুন-
‘‘শারীরিক শাসন করে কখনো মানুষ করা যায় না’’
‘’মা না চাইলে সন্তান কখনো মানুষ হবে না’’
তথ্যসূত্রঃ ইন্টেরনেটের বিভিন্ন সাইট ।

Post a Comment

 
Top