কি আছে ঢাকার গুগল বাসে, এক নজরে দেখে নিন!

প্রযুক্তিকথন ডেস্ক:- বুধবার সারাটা দিন ছিল উত্তেজনায় ভরপুর। বিশেষ করে গুগল বা প্রযুক্তিপ্রেমীদের অবস্থা ছিল এমন।
এদিন ভার্চুয়াল ইঞ্জিন (সার্চ ইঞ্জিন) দিয়ে নয় চর্মচক্ষে দেখা যায় এমন ইঞ্জিনে মৃদু শব্দ তুলে ঢাকার রাস্তায় পা বাড়াল (চাকা ঘুরল) গুগল বাস (ঢাকা মেট্রো-স ১১-০২৪১)
৫ বছর ধরে দেখা অধরা স্বপ্ন এদিন ধরা দিল প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ২০০৯ সালে গুগল বাস এলে অামরাও স্বপ্ন দেখতে থাকি এবার বুঝি বাংলাদেশের পালা। কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পেল বৃহস্পতিবার।
গুগল বাস দেখতে অনেকটা ৫২ সিটের বাসের মতো, বেশ দীর্ঘ। অনেকটা ভলভো বাসের মতোও। বিশাল এই বাসটার সব অাকর্ষণ ভেতরে। তবে বাসের বাইরের অংশটা সাদা রঙের। সেই সাদার মাঝে ফুটে রয়েছে গুগল বাস লোগোসহ ছবি। পাশে লেখা গুগল বাস বাংলাদেশ- পাওয়ারড বাই গুগল। বাসের সামনের স্ক্রিনের ওপর লেখা গুগল বাস বাংলাদেশ।
বাসের ভেতরে রয়েছে মাত্র তিনটি অাসন। যেহেতু এটি যাত্রী পরিবহন করার কোনও বাস নয়, তাই সিট কয়টি সেটা নিয়ে মাথা না ঘামালেও চলবে। মাথা ঘামানোর বিষয় রয়েছে অন্য জায়গায়।
বাসটির ভেতরে রয়েছে অালোর খেলা। লেজার দিয়ে অালোকে বিভিন্ন অাকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কমলা রঙের অালো (কারো কাছে হলুদও মনে হতে পারে) বেশ চোখ কাড়ে। বাসের ভেতরের দেওয়ালে বা গায়ে রয়েছে চার ধরনের রং। এক পাশে রয়েছে হলুদ এবং সবুজ এবং অন্য পাশে রয়েছে গাঢ় লাল ও নীল রং। বাসের ভেতরটা ঝাঁ চকচকে। স্টেইলেস স্টিলে মোড়ানো। মেঝেটাও তাই। এ কারণে অালোর খেলা জমে ওঠে।

Pic-3 

দেওয়ালে ঝোলানো রয়েছে ৮টি মনিটর। প্রথম দেখায় ওগুলোকে টেলিভিশন বলে ভ্রম হতে পারে যে কারো। অাসলে ওগুলো টাচ স্ক্রিন মনিটর। এসবে রয়েছে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ। শিক্ষার্থীরা বা যে কেউ মনিটরের স্পর্শকাতর পর্দা ছুঁয়ে ছুঁয়ে ঢুকে যেতে পারেন ভার্চুয়াল দুনিয়ায়।
বাসটিতে রয়েছে থ্রিজি ইন্টারনেট সংযোগসহ ও উন্নতমানের সাউন্ড সিস্টেম। বাসের ভেতরেই অডিও ও ভিডিওর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
প্রতিটি কর্মশালায় একজন প্রশিক্ষক শিক্ষার্থীদের গুগলের বিভিন্ন সেবা, যেমন গুগল সার্চ, ক্রোম, ডকস, ম্যাপস, ইউটিউব, গুগল প্লাস, জিমেইল, গুগল ট্রান্সলেট, গুগল বাজ, গুগল ভিডিও, জি টক, গুগল মার্স, গুগল মুন, গুগল অার্থ, গুগল ইনবক্সসহ শতেক বিষয়ে ধারণা দেবেন।
কর্মশালায় শিক্ষার্থীরা যা শিখবে তা ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় এমন অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস বা মোবাইল ফোনে চর্চা করারও সুযোগ পাবে।
এ ছাড়াও ভবিষ্যতে গুগল বাসে যুক্ত হবে এমন স্মার্টফোন এবং ট্যাব দিয়ে গুগল গ্লাস, গুগল ড্রাইভ, গুগল কমিউনিটিস এবং গুগল হ্যাংঅাউট বিষয়েও শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানা গেল।
এক বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে (গুগল বাস) দেশের ৩৫টি এলাকার ৬০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬ লাখ শিক্ষার্থীকে হাতে কলমে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

100 

ইন্টারনেটে লগইন করে গুগল বাস বাংলাদেশ কমিউনিটি পেজ থেকে এই উদ্যোগের সর্বশেষ অবস্থান ও অগ্রগতির হালনাগাদ তথ্য জানা যাবে। সেই সঙ্গে যারা যা জেনেছেন বা শিখেছেন তা নিয়ে একে অন্যের সঙ্গে আলোচনাও করতে পারবেন।
অাগামীতে দেশে গুগল বাসের সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে। তবে শুরুতে যা লিখেছিলাম, বাসের ইঞ্জিন চালু হওয়ার সময় মৃদু শব্দ করলেও পরে অার তা মৃদু থাকে না। ক্রমেই বাড়তে থাকে। যা নিয়ে অনেকে অভিযোগ করলেন। মনিটরগুলোও বেশ উঁচুতে অাটকানো। শিশুদের জন্য নাগাল পাওয়াটাও বেশ কঠিন হবে বলে অনেকের অভিমত। গুগল বাস কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় এ দিকগুলোও দেখবেন।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
 
Top